Dhaka ১১:৫৫ পূর্বাহ্ন, সোমবার, ২৩ ডিসেম্বর ২০২৪

বঙ্গভবনের নিরাপত্তা জোরদার: রাষ্ট্রপতির পদত্যাগ দাবিতে বসানো হলো কংক্রিট ব্লক

  • Update Time : ০৮:৪২:৪৫ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ২৪ অক্টোবর ২০২৪
  • / 56

বঙ্গভবনের নিরাপত্তায় এবার বসানো হলো ‘কংক্রিট ব্লক’

রাষ্ট্রপতি মো. সাহাবুদ্দিনের পদত্যাগের দাবিতে উত্তাল আন্দোলনের মধ্যে বঙ্গভবনের নিরাপত্তা জোরদার করতে কংক্রিট ব্লক বসানোর ঘোষণা দিয়েছে পুলিশ। বৃহস্পতিবার (২৪ অক্টোবর) বঙ্গভবনের আশেপাশের এলাকায় কাঁটাতারের বেড়া, ব্যারিকেডের সঙ্গে নতুন করে স্থাপন করা হয়েছে কংক্রিটের ব্লক। এই পদক্ষেপটি এসেছে আন্দোলন ও উত্তেজনা বাড়ার পরপরই, যখন বঙ্গভবনের সামনে বেশ কিছু আন্দোলনকারী ও উৎসুক জনতা বিক্ষিপ্তভাবে অবস্থান নেয়।

নিরাপত্তার বাড়তি ব্যবস্থাপনা

ডিএমপির মতিঝিল বিভাগের উপ-কমিশনার শাহরিয়ার আলী গণমাধ্যমকে জানান, বঙ্গভবনের পরিস্থিতি এখনো স্বাভাবিক থাকলেও নিরাপত্তা ব্যবস্থা আরও জোরদার করা হয়েছে। কংক্রিটের ব্লক বসানোর উদ্দেশ্য জনসমাগম ও আন্দোলনকারীদের কাছ থেকে বঙ্গভবনকে নিরাপদ রাখা। ব্যারিকেড, কাঁটাতারের বেড়া এবং অতিরিক্ত নিরাপত্তা কর্মীদের উপস্থিতি পুরো এলাকাজুড়ে নিরাপত্তার মান আরও শক্তিশালী করেছে।

বৃহস্পতিবারের এই নিরাপত্তা ব্যবস্থা শুধু কংক্রিটের ব্লকেই সীমাবদ্ধ ছিল না। সেনাবাহিনী, এপিবিএন, র‍্যাব, বিজিবি ও পর্যাপ্ত পুলিশ সদস্যও মোতায়েন ছিল। সড়কে অবস্থানরত বিভিন্ন বাহিনীকে দেখা গেছে কড়া নজরদারি করতে। বঙ্গভবনের প্রবেশপথ পুরোপুরি বন্ধ করে দেওয়া হয় এবং সেখানকার ব্যারিকেডে কাঁটাতার দিয়ে বেড়া দেওয়া হয়েছে, যাতে কোনো অনাকাঙ্ক্ষিত ঘটনা না ঘটে।

রাষ্ট্রপতির পদত্যাগ ইস্যুতে উত্তেজনা

মঙ্গলবার রাতে বঙ্গভবনের সামনে রাষ্ট্রপতির পদত্যাগের দাবিতে দুটি পক্ষ তৈরি হয়। বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সমন্বয়ক হাসনাত আবদুল্লাহ ও সারজিস আলম দুইদিন সময় চাওয়ার পর একটি পক্ষ আন্দোলন থেকে সরে গেলেও অন্য একটি পক্ষ বঙ্গভবনের সামনে অবস্থান ধরে রাখে। এই পরিস্থিতিতে বুধবার সকাল থেকে পুরো এলাকার নিরাপত্তা ব্যবস্থা জোরদার করা হয়, যা বৃহস্পতিবার আরও বাড়ানো হয়।

রাষ্ট্রপতির পদত্যাগের প্রশ্নটি সামনে আসে গত ৫ অগাস্ট প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার দেশ ছাড়ার পর। শেখ হাসিনা পদত্যাগ করেছেন কি না, সেই বিতর্ক আরও উত্তেজনা ছড়ায় যখন রাষ্ট্রপতি মো. সাহাবুদ্দিন দৈনিক মানবজমিনের সম্পাদক মতিউর রহমান চৌধুরীকে দেওয়া একটি সাক্ষাৎকারে বলেন, তিনি “পদত্যাগপত্র খুঁজে পাননি।”

এই মন্তব্য প্রকাশিত হওয়ার পর রাষ্ট্রপতি চাপে পড়েন। আইন উপদেষ্টা আসিফ নজরুল সাহাবুদ্দিনের বিরুদ্ধে “মিথ্যা বলার” অভিযোগ তোলেন এবং তার শপথ ভঙ্গের প্রসঙ্গ তুলে তাকে অপসারণের আহ্বান জানান। এরপরই বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন রাষ্ট্রপতির পদত্যাগের দাবিতে মাঠে নামে এবং বঙ্গভবনের সামনে অবস্থান নেয়।

বঙ্গভবনের সামনে আন্দোলন ও নিরাপত্তা ব্যবস্থা

বৃহস্পতিবারের এই ঘটনাগুলো স্পষ্টভাবে বুঝিয়ে দেয় যে রাষ্ট্রপতির পদত্যাগ ইস্যুতে আন্দোলন এখন একটি টানটান পরিস্থিতির দিকে এগিয়ে যাচ্ছে। আন্দোলনের এই ধারা ও উত্তেজনা নিয়ন্ত্রণে রাখতে প্রশাসন ও নিরাপত্তা বাহিনী আরও কঠোরভাবে পদক্ষেপ নিচ্ছে। বিশেষত বঙ্গভবনের সামনে কংক্রিট ব্লক, কাঁটাতার ও বিভিন্ন বাহিনীর উপস্থিতি তা নির্দেশ করে।

বর্তমানে বঙ্গভবনের সামনের সড়কে যান চলাচল স্বাভাবিক থাকলেও, প্রবেশপথগুলো পুরোপুরি বন্ধ করে রাখা হয়েছে। তবে ভবিষ্যতে এই আন্দোলন কী মোড় নেয়, সেটিই দেখার বিষয়।

আপনার সোশ্যাল মিডিয়া এই পোস্ট শেয়ার করুন

বঙ্গভবনের নিরাপত্তা জোরদার: রাষ্ট্রপতির পদত্যাগ দাবিতে বসানো হলো কংক্রিট ব্লক

Update Time : ০৮:৪২:৪৫ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ২৪ অক্টোবর ২০২৪

রাষ্ট্রপতি মো. সাহাবুদ্দিনের পদত্যাগের দাবিতে উত্তাল আন্দোলনের মধ্যে বঙ্গভবনের নিরাপত্তা জোরদার করতে কংক্রিট ব্লক বসানোর ঘোষণা দিয়েছে পুলিশ। বৃহস্পতিবার (২৪ অক্টোবর) বঙ্গভবনের আশেপাশের এলাকায় কাঁটাতারের বেড়া, ব্যারিকেডের সঙ্গে নতুন করে স্থাপন করা হয়েছে কংক্রিটের ব্লক। এই পদক্ষেপটি এসেছে আন্দোলন ও উত্তেজনা বাড়ার পরপরই, যখন বঙ্গভবনের সামনে বেশ কিছু আন্দোলনকারী ও উৎসুক জনতা বিক্ষিপ্তভাবে অবস্থান নেয়।

নিরাপত্তার বাড়তি ব্যবস্থাপনা

ডিএমপির মতিঝিল বিভাগের উপ-কমিশনার শাহরিয়ার আলী গণমাধ্যমকে জানান, বঙ্গভবনের পরিস্থিতি এখনো স্বাভাবিক থাকলেও নিরাপত্তা ব্যবস্থা আরও জোরদার করা হয়েছে। কংক্রিটের ব্লক বসানোর উদ্দেশ্য জনসমাগম ও আন্দোলনকারীদের কাছ থেকে বঙ্গভবনকে নিরাপদ রাখা। ব্যারিকেড, কাঁটাতারের বেড়া এবং অতিরিক্ত নিরাপত্তা কর্মীদের উপস্থিতি পুরো এলাকাজুড়ে নিরাপত্তার মান আরও শক্তিশালী করেছে।

বৃহস্পতিবারের এই নিরাপত্তা ব্যবস্থা শুধু কংক্রিটের ব্লকেই সীমাবদ্ধ ছিল না। সেনাবাহিনী, এপিবিএন, র‍্যাব, বিজিবি ও পর্যাপ্ত পুলিশ সদস্যও মোতায়েন ছিল। সড়কে অবস্থানরত বিভিন্ন বাহিনীকে দেখা গেছে কড়া নজরদারি করতে। বঙ্গভবনের প্রবেশপথ পুরোপুরি বন্ধ করে দেওয়া হয় এবং সেখানকার ব্যারিকেডে কাঁটাতার দিয়ে বেড়া দেওয়া হয়েছে, যাতে কোনো অনাকাঙ্ক্ষিত ঘটনা না ঘটে।

রাষ্ট্রপতির পদত্যাগ ইস্যুতে উত্তেজনা

মঙ্গলবার রাতে বঙ্গভবনের সামনে রাষ্ট্রপতির পদত্যাগের দাবিতে দুটি পক্ষ তৈরি হয়। বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সমন্বয়ক হাসনাত আবদুল্লাহ ও সারজিস আলম দুইদিন সময় চাওয়ার পর একটি পক্ষ আন্দোলন থেকে সরে গেলেও অন্য একটি পক্ষ বঙ্গভবনের সামনে অবস্থান ধরে রাখে। এই পরিস্থিতিতে বুধবার সকাল থেকে পুরো এলাকার নিরাপত্তা ব্যবস্থা জোরদার করা হয়, যা বৃহস্পতিবার আরও বাড়ানো হয়।

রাষ্ট্রপতির পদত্যাগের প্রশ্নটি সামনে আসে গত ৫ অগাস্ট প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার দেশ ছাড়ার পর। শেখ হাসিনা পদত্যাগ করেছেন কি না, সেই বিতর্ক আরও উত্তেজনা ছড়ায় যখন রাষ্ট্রপতি মো. সাহাবুদ্দিন দৈনিক মানবজমিনের সম্পাদক মতিউর রহমান চৌধুরীকে দেওয়া একটি সাক্ষাৎকারে বলেন, তিনি “পদত্যাগপত্র খুঁজে পাননি।”

এই মন্তব্য প্রকাশিত হওয়ার পর রাষ্ট্রপতি চাপে পড়েন। আইন উপদেষ্টা আসিফ নজরুল সাহাবুদ্দিনের বিরুদ্ধে “মিথ্যা বলার” অভিযোগ তোলেন এবং তার শপথ ভঙ্গের প্রসঙ্গ তুলে তাকে অপসারণের আহ্বান জানান। এরপরই বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন রাষ্ট্রপতির পদত্যাগের দাবিতে মাঠে নামে এবং বঙ্গভবনের সামনে অবস্থান নেয়।

বঙ্গভবনের সামনে আন্দোলন ও নিরাপত্তা ব্যবস্থা

বৃহস্পতিবারের এই ঘটনাগুলো স্পষ্টভাবে বুঝিয়ে দেয় যে রাষ্ট্রপতির পদত্যাগ ইস্যুতে আন্দোলন এখন একটি টানটান পরিস্থিতির দিকে এগিয়ে যাচ্ছে। আন্দোলনের এই ধারা ও উত্তেজনা নিয়ন্ত্রণে রাখতে প্রশাসন ও নিরাপত্তা বাহিনী আরও কঠোরভাবে পদক্ষেপ নিচ্ছে। বিশেষত বঙ্গভবনের সামনে কংক্রিট ব্লক, কাঁটাতার ও বিভিন্ন বাহিনীর উপস্থিতি তা নির্দেশ করে।

বর্তমানে বঙ্গভবনের সামনের সড়কে যান চলাচল স্বাভাবিক থাকলেও, প্রবেশপথগুলো পুরোপুরি বন্ধ করে রাখা হয়েছে। তবে ভবিষ্যতে এই আন্দোলন কী মোড় নেয়, সেটিই দেখার বিষয়।