Dhaka ১২:০৭ পূর্বাহ্ন, মঙ্গলবার, ২৪ ডিসেম্বর ২০২৪

এনবিআর রাজস্ব আদায় ৩৮ হাজার কোটি টাকা কম চ্যালেঞ্জের মুখে অর্থবছর

  • Update Time : ১১:৫৮:২৮ পূর্বাহ্ন, শনিবার, ২৭ জুলাই ২০২৪
  • / 19

এনবিআর-এর রাজস্ব আদায় ৩৮ হাজার কোটি টাকা কম

এনবিআর-এর রাজস্ব আদায় ৩৮ হাজার কোটি টাকা কম
এনবিআর-এর রাজস্ব আদায় ৩৮ হাজার কোটি টাকা কম

এনবিআর রাজস্ব আদায়:

গত ২০২৩-২৪ অর্থবছরে জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (এনবিআর) ৩ লাখ ৭১ হাজার ৮৪২ কোটি ২৩ লাখ টাকা রাজস্ব আদায় করেছে। এটি এনবিআরের সংশোধিত লক্ষ্যমাত্রার চেয়ে ৩৮ হাজার ১৫৮ কোটি টাকা কম এবং মূল বাজেটের লক্ষ্যমাত্রার চেয়ে ৫৮ হাজার কোটি টাকা কম।

তবে, ২০২২-২৩ অর্থবছরের তুলনায় এই অর্থবছরে ১২.১৭ শতাংশ বেশি রাজস্ব আদায় হয়েছে। এই তথ্যটি এনবিআরের সাময়িক প্রতিবেদনে প্রকাশিত হয়েছে।

২০২৩-২৪ অর্থবছরের মূল বাজেটে এনবিআরের রাজস্ব আদায়ের লক্ষ্যমাত্রা ছিল ৪ লাখ ৩০ হাজার কোটি টাকা। তবে রাজস্ব আদায়ে কাঙ্ক্ষিত প্রবৃদ্ধি না থাকায় সংশোধিত বাজেটে এটি কমিয়ে ৪ লাখ ১০ হাজার কোটি টাকা নির্ধারণ করা হয়।

২০২২-২৩ অর্থবছরে এনবিআর ৩ লাখ ১৯ হাজার ৭৩১ কোটি টাকার রাজস্ব আদায় করেছিল। চলতি ২০২৪-২৫ অর্থবছরে এনবিআরের রাজস্ব আদায়ের লক্ষ্যমাত্রা ৪ লাখ ৮০ হাজার কোটি টাকা নির্ধারণ করা হয়েছে।

এনবিআরের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা জানান, গত অর্থবছরের শুরু থেকেই আমদানিকে নিরুৎসাহিত করা হয় এবং আমদানি ঋণপত্র (এলসি) খোলার ক্ষেত্রে কড়াকড়ি ছিল। এই কারণে পুরো অর্থবছরে রাজস্ব সংগ্রহে নেতিবাচক প্রভাব পড়েছিল। তারপরও সামগ্রিক রাজস্ব সংগ্রহের প্রবৃদ্ধি সন্তোষজনক ছিল।

যদিও লক্ষ্যমাত্রা অর্জিত হয়নি। চলতি অর্থবছরের লক্ষ্যমাত্রা আরও বড় চ্যালেঞ্জ বলে মনে হচ্ছে, তবে এনবিআর লক্ষ্য অর্জনে সর্বোচ্চ চেষ্টা করবে।

আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিলের (আইএমএফ) ঋণ কর্মসূচির শর্ত ছিল ২০২৩-২৪ অর্থবছরে সরকারের কর-জিডিপির অনুপাত শূন্য দশমিক ৫ শতাংশ বাড়ানো। আইএমএফ বাংলাদেশের জন্য ৩ লাখ ৯৪ হাজার ৫৩০ কোটি টাকা কর-রাজস্বের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করে দেয়, যার মধ্যে এনবিআর-বহির্ভূত করও অন্তর্ভুক্ত।

এনবিআর-বহির্ভূত করের মধ্যে রয়েছে মাদক শুল্ক, যানবাহন কর, ভূমি রাজস্ব, স্ট্যাম্প বিক্রয় (নন-জুডিশিয়াল) ও সারচার্জ। গত অর্থবছরে এসব খাত থেকে ১৯ হাজার কোটি টাকার রাজস্ব আহরণের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছিল।

অর্থ মন্ত্রণালয়ের সূত্রে জানা গেছে, প্রথম আট মাসে (জুলাই-ফেব্রুয়ারি) এসব খাত থেকে ৫ হাজার ১০৯ কোটি টাকার রাজস্ব আহরণ হয়েছে। পরবর্তী চার মাসে একই পরিমাণ রাজস্ব আসলে পুরো অর্থবছরে মোট রাজস্ব হবে প্রায় ১০ হাজার কোটি টাকা, যা আইএমএফের দেওয়া লক্ষ্যমাত্রা থেকে ১২ হাজার কোটি টাকা কম।

আইএমএফ গত বছরের ৩০ জানুয়ারি বাংলাদেশের জন্য ৪৭০ কোটি ডলার ঋণ প্রস্তাব অনুমোদন করে, যার মধ্যে তিন কিস্তিতে প্রায় ২৩০ কোটি ৮২ লাখ ডলার ছাড় হয়েছে। জুনভিত্তিক শর্ত বাস্তবায়নের পর চতুর্থ কিস্তি ছাড় হবে।

অন্যান্য শর্ত পূরণ করা সম্ভব হলেও কর রাজস্ব ও বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভে লক্ষ্যমাত্রা থেকে পিছিয়ে রয়েছে সরকার। তবে, গত ডিসেম্বর পর্যন্ত রাজস্বের লক্ষ্যমাত্রা অর্জন করেছে সরকার। ২০২৬ সাল পর্যন্ত সাড়ে তিন বছরে মোট সাত কিস্তিতে পুরো অর্থ দেওয়ার কথা রয়েছে। ঋণ কর্মসূচির আওতায় বাংলাদেশকে বেশ কিছু শর্ত পরিপালন করতে হচ্ছে।

ট্যাগ :

আপনার সোশ্যাল মিডিয়া এই পোস্ট শেয়ার করুন

এনবিআর রাজস্ব আদায় ৩৮ হাজার কোটি টাকা কম চ্যালেঞ্জের মুখে অর্থবছর

Update Time : ১১:৫৮:২৮ পূর্বাহ্ন, শনিবার, ২৭ জুলাই ২০২৪
এনবিআর-এর রাজস্ব আদায় ৩৮ হাজার কোটি টাকা কম
এনবিআর-এর রাজস্ব আদায় ৩৮ হাজার কোটি টাকা কম

এনবিআর রাজস্ব আদায়:

গত ২০২৩-২৪ অর্থবছরে জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (এনবিআর) ৩ লাখ ৭১ হাজার ৮৪২ কোটি ২৩ লাখ টাকা রাজস্ব আদায় করেছে। এটি এনবিআরের সংশোধিত লক্ষ্যমাত্রার চেয়ে ৩৮ হাজার ১৫৮ কোটি টাকা কম এবং মূল বাজেটের লক্ষ্যমাত্রার চেয়ে ৫৮ হাজার কোটি টাকা কম।

তবে, ২০২২-২৩ অর্থবছরের তুলনায় এই অর্থবছরে ১২.১৭ শতাংশ বেশি রাজস্ব আদায় হয়েছে। এই তথ্যটি এনবিআরের সাময়িক প্রতিবেদনে প্রকাশিত হয়েছে।

২০২৩-২৪ অর্থবছরের মূল বাজেটে এনবিআরের রাজস্ব আদায়ের লক্ষ্যমাত্রা ছিল ৪ লাখ ৩০ হাজার কোটি টাকা। তবে রাজস্ব আদায়ে কাঙ্ক্ষিত প্রবৃদ্ধি না থাকায় সংশোধিত বাজেটে এটি কমিয়ে ৪ লাখ ১০ হাজার কোটি টাকা নির্ধারণ করা হয়।

২০২২-২৩ অর্থবছরে এনবিআর ৩ লাখ ১৯ হাজার ৭৩১ কোটি টাকার রাজস্ব আদায় করেছিল। চলতি ২০২৪-২৫ অর্থবছরে এনবিআরের রাজস্ব আদায়ের লক্ষ্যমাত্রা ৪ লাখ ৮০ হাজার কোটি টাকা নির্ধারণ করা হয়েছে।

এনবিআরের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা জানান, গত অর্থবছরের শুরু থেকেই আমদানিকে নিরুৎসাহিত করা হয় এবং আমদানি ঋণপত্র (এলসি) খোলার ক্ষেত্রে কড়াকড়ি ছিল। এই কারণে পুরো অর্থবছরে রাজস্ব সংগ্রহে নেতিবাচক প্রভাব পড়েছিল। তারপরও সামগ্রিক রাজস্ব সংগ্রহের প্রবৃদ্ধি সন্তোষজনক ছিল।

যদিও লক্ষ্যমাত্রা অর্জিত হয়নি। চলতি অর্থবছরের লক্ষ্যমাত্রা আরও বড় চ্যালেঞ্জ বলে মনে হচ্ছে, তবে এনবিআর লক্ষ্য অর্জনে সর্বোচ্চ চেষ্টা করবে।

আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিলের (আইএমএফ) ঋণ কর্মসূচির শর্ত ছিল ২০২৩-২৪ অর্থবছরে সরকারের কর-জিডিপির অনুপাত শূন্য দশমিক ৫ শতাংশ বাড়ানো। আইএমএফ বাংলাদেশের জন্য ৩ লাখ ৯৪ হাজার ৫৩০ কোটি টাকা কর-রাজস্বের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করে দেয়, যার মধ্যে এনবিআর-বহির্ভূত করও অন্তর্ভুক্ত।

এনবিআর-বহির্ভূত করের মধ্যে রয়েছে মাদক শুল্ক, যানবাহন কর, ভূমি রাজস্ব, স্ট্যাম্প বিক্রয় (নন-জুডিশিয়াল) ও সারচার্জ। গত অর্থবছরে এসব খাত থেকে ১৯ হাজার কোটি টাকার রাজস্ব আহরণের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছিল।

অর্থ মন্ত্রণালয়ের সূত্রে জানা গেছে, প্রথম আট মাসে (জুলাই-ফেব্রুয়ারি) এসব খাত থেকে ৫ হাজার ১০৯ কোটি টাকার রাজস্ব আহরণ হয়েছে। পরবর্তী চার মাসে একই পরিমাণ রাজস্ব আসলে পুরো অর্থবছরে মোট রাজস্ব হবে প্রায় ১০ হাজার কোটি টাকা, যা আইএমএফের দেওয়া লক্ষ্যমাত্রা থেকে ১২ হাজার কোটি টাকা কম।

আইএমএফ গত বছরের ৩০ জানুয়ারি বাংলাদেশের জন্য ৪৭০ কোটি ডলার ঋণ প্রস্তাব অনুমোদন করে, যার মধ্যে তিন কিস্তিতে প্রায় ২৩০ কোটি ৮২ লাখ ডলার ছাড় হয়েছে। জুনভিত্তিক শর্ত বাস্তবায়নের পর চতুর্থ কিস্তি ছাড় হবে।

অন্যান্য শর্ত পূরণ করা সম্ভব হলেও কর রাজস্ব ও বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভে লক্ষ্যমাত্রা থেকে পিছিয়ে রয়েছে সরকার। তবে, গত ডিসেম্বর পর্যন্ত রাজস্বের লক্ষ্যমাত্রা অর্জন করেছে সরকার। ২০২৬ সাল পর্যন্ত সাড়ে তিন বছরে মোট সাত কিস্তিতে পুরো অর্থ দেওয়ার কথা রয়েছে। ঋণ কর্মসূচির আওতায় বাংলাদেশকে বেশ কিছু শর্ত পরিপালন করতে হচ্ছে।