নির্বাচন কমিশন প্রথম সভায় ভোটার তালিকা হালনাগাদ: প্রযুক্তি দিয়ে কি প্রক্রিয়া আরো সহজ হয় না ?
- Update Time : ০৪:৪৫:৩০ অপরাহ্ন, সোমবার, ২ ডিসেম্বর ২০২৪
- / 20
নতুন নির্বাচন কমিশনের প্রথম সভায় গুরুত্বপূর্ণ সিদ্ধান্ত: ভোটার তালিকা হালনাগাদসহ নানা সিদ্ধান্ত
বাংলাদেশের নতুন নির্বাচন কমিশন (ইসি) ২ ডিসেম্বর প্রথমবারের মতো বৈঠকে বসে এবং গুরুত্বপূর্ণ সিদ্ধান্ত গ্রহণ করে। এ বৈঠকের মূল বিষয় ছিল ভোটার তালিকা হালনাগাদ এবং জাতীয় সংসদের সীমানা নির্ধারণ। রাজধানীর আগারগাঁওয়ে নির্বাচন কমিশন ভবনে প্রধান নির্বাচন কমিশনার (সিইসি) এম এম নাসির উদ্দীনের নেতৃত্বে অনুষ্ঠিত এই সভা থেকে অনেক গুরুত্বপূর্ণ বিষয় সামনে এসেছে।
ভোটার তালিকা হালনাগাদ: ১৭ লাখ নতুন ভোটার যুক্ত হবে
নির্বাচন কমিশনার ব্রিগেডিয়ার জেনারেল (অব.) আবুল ফজল মো. সানাউল্লাহ জানান, নির্ভুল ভোটার তালিকা প্রণয়নের লক্ষ্যে আগামী মার্চ মাসে তালিকা প্রকাশ করা হবে। এরপর বাড়ি বাড়ি গিয়ে ভোটার হালনাগাদের তথ্য সংগ্রহ করা হবে। এই তালিকায় মোট ১৭ লাখ নতুন ভোটার যুক্ত হবে, যা নির্বাচন কমিশনের জন্য একটি বড় পদক্ষেপ।
বিগত নির্বাচন কমিশনের উন্নতি ও ভবিষ্যৎ কর্মসূচি
এ সভায় নির্বাচনের জন্য ভোটার তালিকা হালনাগাদ কর্মসূচি ও জাতীয় সংসদের সীমানা নির্ধারণ বিষয়ে গুরুত্বপূর্ণ সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।
ইসি সচিবালয়ের অতিরিক্ত সচিব কে এম আলী নেওয়াজ জানান, ২ জানুয়ারি অনুযায়ী প্রতিবছর ভোটার তালিকা হালনাগাদ করার খসড়া প্রকাশ করা হয়। কেউ যদি মনে করেন তার নাম তালিকায় নেই, তাহলে তিনি আবেদন করার মাধ্যমে ভোটার হিসেবে যোগ্য হলে তালিকায় অন্তর্ভুক্ত হতে পারবেন।
তিনি আরো বলেন, মার্চের ২ তারিখের মধ্যে এই কাজ সম্পন্ন করতে হবে, কারণ এই সময়ের মধ্যে যাদের বয়স ১ জানুয়ারিতে ১৮ বছর পূর্ণ হয়েছে, তারা ওই বছরেই ভোটার তালিকায় যুক্ত হবে।
বাড়ি বাড়ি গিয়ে তথ্য সংগ্রহের প্রস্তুতি
এ বিষয়ে ইসি সচিবালয় প্রস্তুতি নিয়ে আলোচনা করেছে। তবে, এ মুহূর্তে কমিশন কোনো স্পষ্ট প্রস্তুতির কথা জানাতে পারেনি। কমিশন যেভাবে নির্দেশনা দেবে, সেভাবেই এই কাজের জন্য প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নেওয়া হবে।
প্রযুক্তির ব্যবহার: ভোটার তালিকা হালনাগাদ সহজ করার সুযোগ
বিশ্বের বিভিন্ন দেশে উন্নত প্রযুক্তি ব্যবহারের মাধ্যমে নির্বাচনী প্রক্রিয়া সহজ করা হচ্ছে। ডিজিটাল ভোটার তালিকা ব্যবহারের মাধ্যমে অনেক দেশ দ্রুত এবং নির্ভুলভাবে তথ্য হালনাগাদ করছে। বাংলাদেশের নির্বাচন কমিশন যদি মোবাইল অ্যাপ বা অনলাইন পদ্ধতি ব্যবহার করে, তবে ভোটার তালিকা হালনাগাদ প্রক্রিয়া আরও দ্রুত এবং নির্ভুল হবে।
জাতীয় সংসদের সীমানা পুনর্নির্ধারণ
সভায় জাতীয় সংসদ সীমানা নির্ধারণ সম্পর্কিত সিদ্ধান্তও গৃহীত হয়েছে। এর ফলে আগামী ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন পরিচালিত হবে এই নতুন কমিশনের অধীনে। এর মাধ্যমে নির্বাচনী প্রক্রিয়া আরো বেশি স্বচ্ছ ও নির্ভুল হবে বলে আশা করা হচ্ছে।
সংশয় এবং সমাধান: প্রযুক্তি ও আধুনিক পদ্ধতির প্রয়োগ
তবে প্রশ্ন উঠছে:
- প্রযুক্তির ব্যবহারে কি ভোটার তালিকা হালনাগাদ প্রক্রিয়া আরো দ্রুত এবং সহজ করা সম্ভব?
- ডিজিটাল পদ্ধতির মাধ্যমে আমরা কি নতুন ভোটারদের দ্রুত অন্তর্ভুক্ত করতে পারব?
এই প্রক্রিয়াগুলি সহজ এবং দ্রুত করতে প্রযুক্তির ব্যবহার অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। তবে, বাংলাদেশে এই ধরণের আধুনিক পদ্ধতি কিভাবে প্রয়োগ করা হবে, সেটি ভবিষ্যতের বিষয়।
শেষ কথা
এ দিন নির্বাচন কমিশনের প্রথম সভা বাংলাদেশে একটি নতুন অধ্যায়ের সূচনা হলো। নতুন নির্বাচনী কমিশনের নেতৃত্বে, আমরা আশা করি, নির্বাচনী প্রক্রিয়া আরো স্বচ্ছ, দ্রুত, এবং প্রযুক্তিনির্ভর হবে। তবে, ভোটার তালিকা হালনাগাদ এবং জাতীয় সংসদ নির্বাচন সুষ্ঠুভাবে সম্পন্ন করতে প্রযুক্তির ব্যবহার একটি গুরুত্বপূর্ণ চ্যালেঞ্জ হয়ে দাঁড়াবে।
আপনি কি মনে করেন? বাংলাদেশে নির্বাচনী প্রক্রিয়ায় প্রযুক্তির ব্যবহার আরও বাড়ানো উচিত? মন্তব্য করুন এবং আপনার মতামত আমাদের সঙ্গে শেয়ার করুন।