Dhaka ১২:৩১ পূর্বাহ্ন, মঙ্গলবার, ২৪ ডিসেম্বর ২০২৪

গাজায় ইসরায়েলি হামলায় নিহত ৫৭: সংঘর্ষে বাড়ছে প্রাণহানি

  • Update Time : ১২:৫৯:১০ অপরাহ্ন, বুধবার, ১৭ জুলাই ২০২৪
  • / 57

গাজায় ইসরায়েলি হামলায় নিহত ৫৭: সংঘর্ষে বাড়ছে প্রাণহানি

গাজা উপত্যকায় ইসরায়েলি বোমা হামলায় কমপক্ষে ৫৭ জন নিহত হয়েছেন। মঙ্গলবার (১৬ জুলাই) দেশটির স্বাস্থ্য কর্মকর্তারা এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন। তারা জানিয়েছেন, দক্ষিণ ও মধ্যাঞ্চলে ইসরায়েলি বোমা হামলায় অন্তত ৫৭ জন নিহত হয়েছেন। খবর বিবিসির।

ইসরায়েলি সামরিক বাহিনীর বিবৃতি

ইসরায়েলের সামরিক বাহিনী এক বিবৃতিতে জানিয়েছে, মঙ্গলবার গাজা উপত্যকার বেশ কয়েকটি অংশে হামাসের নেতৃত্বাধীন যোদ্ধাদের সঙ্গে ইসরায়েলি সেনাবাহিনীর সংঘর্ষ হয়েছে। গাজার নুসেইরাত শরণার্থী শিবিরে জাতিসংঘ পরিচালিত একটি স্কুলের ভেতরে কর্মরত সন্ত্রাসীদের লক্ষ্য করে হামলা চালানো হয়। এই হামলায় কমপক্ষে ৫৭ জন নিহত হয়েছেন। আহত হয়েছেন আরো বহু মানুষ।

প্রাণহানির পরিসংখ্যান

গত বছরের ৭ অক্টোবর থেকে ৯ মাসেরও বেশি সময় ধরে চলা হামলায় ভূখণ্ডটিতে ৩৮ হাজার ৭১০ জনেরও বেশি মানুষ নিহত হয়েছেন বলে অঞ্চলটির স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় জানিয়েছে। নিহতদের এই পরিসংখ্যানে বেসামরিক মানুষ এবং যোদ্ধাদের সংখ্যা আলাদা করে উল্লেখ করা হয় না। তবে গত এপ্রিলের শেষ নাগাদ গাজার এই মন্ত্রণালয় বলেছিল, মৃতদের মধ্যে ১৪ হাজার ৬৮০ জন শিশু, নারী এবং বয়স্ক ব্যক্তি রয়েছেন।

যুদ্ধবিরতির প্রস্তাব উপেক্ষা

গাজায় অবিলম্বে যুদ্ধবিরতির দাবি জানিয়ে জাতিসংঘের নিরাপত্তা পরিষদের প্রস্তাব সত্ত্বেও ইসরায়েল অবরুদ্ধ এই ভূখণ্ডে তার নৃশংস আক্রমণ অব্যাহত রেখেছে। ইসরায়েলের এই আগ্রাসনের ফলে ব্যাপক মানবিক বিপর্যয়ের সৃষ্টি হয়েছে।

হামাসের প্রতিক্রিয়া

গত ৭ অক্টোবর হামাসের নজিরবিহীন আন্তঃসীমান্ত হামলার পর থেকে ইসরায়েল গাজা উপত্যকায় অবিরাম বিমান ও স্থল হামলা চালিয়ে যাচ্ছে। ইসরায়েলি এই হামলায় হাসপাতাল, স্কুল, শরণার্থী শিবির, মসজিদ, গির্জাসহ হাজার হাজার ভবন ক্ষতিগ্রস্ত বা ধ্বংস হয়ে গেছে। এছাড়া ইসরায়েলি আগ্রাসনের কারণে প্রায় ২০ লাখেরও বেশি বাসিন্দা তাদের বাড়িঘর ছাড়তে বাধ্য হয়েছেন।

ফিলিস্তিনের স্বাধীনতাকামী সংগঠন হামাস গাজায় হামলা জোরদার করার জন্য ইসরাইলকে অভিযুক্ত করেছে। তাদের দাবি, যুদ্ধবিরতি চুক্তিতে পৌঁছাতে আরব মধ্যস্থতাকারীদের এবং মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের প্রচেষ্টাকে লাইনচ্যুত করার চেষ্টা করছে দেশটি।

মানবিক বিপর্যয়

ইসরায়েলি আগ্রাসন গাজার মানবিক পরিস্থিতিকে গুরুতর বিপর্যয়ের দিকে ঠেলে দিয়েছে। স্বাস্থ্য সেবা, শিক্ষা প্রতিষ্ঠান, এবং অন্যান্য জরুরি সেবা ধ্বংস হওয়ার ফলে সাধারণ মানুষের দুর্দশা চরমে পৌঁছেছে। বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা এবং অন্যান্য আন্তর্জাতিক সংস্থাগুলি বারবার আহ্বান জানিয়েছে, ইসরায়েল যেন তার হামলা বন্ধ করে এবং গাজায় অবিলম্বে মানবিক সহায়তা পৌঁছানোর অনুমতি দেয়।

আন্তর্জাতিক প্রতিক্রিয়া

ইসরায়েলি হামলার বিরুদ্ধে আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের প্রতিক্রিয়া মিশ্রিত। অনেক দেশ ইসরায়েলের এই আগ্রাসনের নিন্দা জানিয়েছে এবং অবিলম্বে যুদ্ধবিরতির আহ্বান জানিয়েছে। তবে ইসরায়েল তার সন্ত্রাসবিরোধী প্রচারণার অংশ হিসেবে এই হামলার যৌক্তিকতা ব্যাখ্যা করে আসছে।

উপসংহার

গাজায় ইসরায়েলি হামলায় ৫৭ জনের প্রাণহানি এবং চলমান সংঘর্ষ পরিস্থিতি আরও উত্তেজিত করেছে। এই অবস্থার অবসান ঘটানোর জন্য আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের প্রচেষ্টা অব্যাহত রয়েছে। ইসরায়েল এবং হামাসের মধ্যে দীর্ঘমেয়াদী শান্তি প্রতিষ্ঠার জন্য জরুরি পদক্ষেপ গ্রহণ করা অত্যন্ত প্রয়োজন।

ট্যাগ :

আপনার সোশ্যাল মিডিয়া এই পোস্ট শেয়ার করুন

গাজায় ইসরায়েলি হামলায় নিহত ৫৭: সংঘর্ষে বাড়ছে প্রাণহানি

Update Time : ১২:৫৯:১০ অপরাহ্ন, বুধবার, ১৭ জুলাই ২০২৪

গাজা উপত্যকায় ইসরায়েলি বোমা হামলায় কমপক্ষে ৫৭ জন নিহত হয়েছেন। মঙ্গলবার (১৬ জুলাই) দেশটির স্বাস্থ্য কর্মকর্তারা এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন। তারা জানিয়েছেন, দক্ষিণ ও মধ্যাঞ্চলে ইসরায়েলি বোমা হামলায় অন্তত ৫৭ জন নিহত হয়েছেন। খবর বিবিসির।

ইসরায়েলি সামরিক বাহিনীর বিবৃতি

ইসরায়েলের সামরিক বাহিনী এক বিবৃতিতে জানিয়েছে, মঙ্গলবার গাজা উপত্যকার বেশ কয়েকটি অংশে হামাসের নেতৃত্বাধীন যোদ্ধাদের সঙ্গে ইসরায়েলি সেনাবাহিনীর সংঘর্ষ হয়েছে। গাজার নুসেইরাত শরণার্থী শিবিরে জাতিসংঘ পরিচালিত একটি স্কুলের ভেতরে কর্মরত সন্ত্রাসীদের লক্ষ্য করে হামলা চালানো হয়। এই হামলায় কমপক্ষে ৫৭ জন নিহত হয়েছেন। আহত হয়েছেন আরো বহু মানুষ।

প্রাণহানির পরিসংখ্যান

গত বছরের ৭ অক্টোবর থেকে ৯ মাসেরও বেশি সময় ধরে চলা হামলায় ভূখণ্ডটিতে ৩৮ হাজার ৭১০ জনেরও বেশি মানুষ নিহত হয়েছেন বলে অঞ্চলটির স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় জানিয়েছে। নিহতদের এই পরিসংখ্যানে বেসামরিক মানুষ এবং যোদ্ধাদের সংখ্যা আলাদা করে উল্লেখ করা হয় না। তবে গত এপ্রিলের শেষ নাগাদ গাজার এই মন্ত্রণালয় বলেছিল, মৃতদের মধ্যে ১৪ হাজার ৬৮০ জন শিশু, নারী এবং বয়স্ক ব্যক্তি রয়েছেন।

যুদ্ধবিরতির প্রস্তাব উপেক্ষা

গাজায় অবিলম্বে যুদ্ধবিরতির দাবি জানিয়ে জাতিসংঘের নিরাপত্তা পরিষদের প্রস্তাব সত্ত্বেও ইসরায়েল অবরুদ্ধ এই ভূখণ্ডে তার নৃশংস আক্রমণ অব্যাহত রেখেছে। ইসরায়েলের এই আগ্রাসনের ফলে ব্যাপক মানবিক বিপর্যয়ের সৃষ্টি হয়েছে।

হামাসের প্রতিক্রিয়া

গত ৭ অক্টোবর হামাসের নজিরবিহীন আন্তঃসীমান্ত হামলার পর থেকে ইসরায়েল গাজা উপত্যকায় অবিরাম বিমান ও স্থল হামলা চালিয়ে যাচ্ছে। ইসরায়েলি এই হামলায় হাসপাতাল, স্কুল, শরণার্থী শিবির, মসজিদ, গির্জাসহ হাজার হাজার ভবন ক্ষতিগ্রস্ত বা ধ্বংস হয়ে গেছে। এছাড়া ইসরায়েলি আগ্রাসনের কারণে প্রায় ২০ লাখেরও বেশি বাসিন্দা তাদের বাড়িঘর ছাড়তে বাধ্য হয়েছেন।

ফিলিস্তিনের স্বাধীনতাকামী সংগঠন হামাস গাজায় হামলা জোরদার করার জন্য ইসরাইলকে অভিযুক্ত করেছে। তাদের দাবি, যুদ্ধবিরতি চুক্তিতে পৌঁছাতে আরব মধ্যস্থতাকারীদের এবং মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের প্রচেষ্টাকে লাইনচ্যুত করার চেষ্টা করছে দেশটি।

মানবিক বিপর্যয়

ইসরায়েলি আগ্রাসন গাজার মানবিক পরিস্থিতিকে গুরুতর বিপর্যয়ের দিকে ঠেলে দিয়েছে। স্বাস্থ্য সেবা, শিক্ষা প্রতিষ্ঠান, এবং অন্যান্য জরুরি সেবা ধ্বংস হওয়ার ফলে সাধারণ মানুষের দুর্দশা চরমে পৌঁছেছে। বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা এবং অন্যান্য আন্তর্জাতিক সংস্থাগুলি বারবার আহ্বান জানিয়েছে, ইসরায়েল যেন তার হামলা বন্ধ করে এবং গাজায় অবিলম্বে মানবিক সহায়তা পৌঁছানোর অনুমতি দেয়।

আন্তর্জাতিক প্রতিক্রিয়া

ইসরায়েলি হামলার বিরুদ্ধে আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের প্রতিক্রিয়া মিশ্রিত। অনেক দেশ ইসরায়েলের এই আগ্রাসনের নিন্দা জানিয়েছে এবং অবিলম্বে যুদ্ধবিরতির আহ্বান জানিয়েছে। তবে ইসরায়েল তার সন্ত্রাসবিরোধী প্রচারণার অংশ হিসেবে এই হামলার যৌক্তিকতা ব্যাখ্যা করে আসছে।

উপসংহার

গাজায় ইসরায়েলি হামলায় ৫৭ জনের প্রাণহানি এবং চলমান সংঘর্ষ পরিস্থিতি আরও উত্তেজিত করেছে। এই অবস্থার অবসান ঘটানোর জন্য আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের প্রচেষ্টা অব্যাহত রয়েছে। ইসরায়েল এবং হামাসের মধ্যে দীর্ঘমেয়াদী শান্তি প্রতিষ্ঠার জন্য জরুরি পদক্ষেপ গ্রহণ করা অত্যন্ত প্রয়োজন।