পার্বত্য চট্টগ্রামে উত্তেজনাকর পরিস্থিতি: আইএসপিআরের সতর্কতা
- Update Time : ০৪:০৯:৩৫ অপরাহ্ন, শুক্রবার, ২০ সেপ্টেম্বর ২০২৪
- / 93
পার্বত্য চট্টগ্রামে উত্তেজনাকর পরিস্থিতি: আইএসপিআরের বিবৃতি
সম্প্রতি পার্বত্য চট্টগ্রামের খাগড়াছড়ি ও রাঙামাটি জেলায় উত্তেজনাকর পরিস্থিতি সৃষ্টি হয়েছে, যা একটি ভয়াবহ দাঙ্গায় রূপ নিতে পারে বলে সতর্ক করেছে আন্তঃবাহিনী জনসংযোগ পরিদপ্তর (আইএসপিআর)। ২০ সেপ্টেম্বর প্রকাশিত এক বিবৃতিতে এই পরিস্থিতির প্রেক্ষাপট তুলে ধরা হয়েছে।
ঘটনার পটভূমি
১৮ সেপ্টেম্বর খাগড়াছড়ি জেলার সদর এলাকায় একটি মোটরসাইকেল চুরির ঘটনা ঘটে, যা নিয়ে স্থানীয় জনগণের মধ্যে তীব্র প্রতিক্রিয়া দেখা দেয়। গণপিটুনির মাধ্যমে মো. মামুন (৩০) নামে এক যুবক নিহত হন। পরদিন ১৯ সেপ্টেম্বর, দীঘিনালা কলেজ থেকে একটি বিক্ষোভ মিছিল বের হয়, যা বোয়ালখালী বাজার অতিক্রম করার সময় ইউপিডিএফ (মূল) নামক সংগঠনের সদস্যদের দ্বারা হামলার শিকার হয়। হামলার ফলে বাজারে অগ্নিসংযোগের ঘটনা ঘটে, এবং উভয়পক্ষের মধ্যে সংঘর্ষে ৬ জন আহত হন।
পরিস্থিতির অবনতি
সংঘর্ষ চলাকালে স্থানীয় সেনাবাহিনী পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনার চেষ্টা করে। তবে ১৯ সেপ্টেম্বর রাত সাড়ে ১০টায়, খাগড়াছড়ি শহরের স্বনির্ভর এলাকায় একটি টহলদলকে বাধা দেওয়ার চেষ্টা করে উত্তেজিত জনতা। ইউপিডিএফ (মূল) সদস্যদের দ্বারা গুলিবর্ষণের ঘটনায় ৩ জন নিহত এবং বেশ কয়েকজন আহত হন।
একই রাতে, পানছড়িতে যুবকদের উপর হামলা চালানো হয়, এবং ফায়ার ব্রিগেড অফিস ভাঙচুরের ঘটনা ঘটে। এই ধরনের সহিংসতা পরিস্থিতিকে আরও জটিল করে তোলে।
রাঙামাটিতে মিছিল ও অগ্নিসংযোগ
২০ সেপ্টেম্বর সকালে, পিসিজেএসএস সমর্থিত পাহাড়ি ছাত্র পরিষদের আয়োজনে রাঙামাটি জেলা সদরে ‘সংঘাত ও বৈষম্য বিরোধী পাহাড়ি ছাত্র আন্দোলন’ নামে একটি মিছিল অনুষ্ঠিত হয়। ৮০০-১০০০ জন জনতার উপস্থিতিতে এই মিছিল বনরুপা বাজার এলাকায় অগ্রসর হয়, যেখানে মসজিদ, ব্যাংক এবং বিভিন্ন দোকানে ভাঙচুর ও অগ্নিসংযোগের ঘটনা ঘটে।
আইন-শৃঙ্খলা পরিস্থিতি
বর্তমান পরিস্থিতির অবনতি ঘটতে থাকায় খাগড়াছড়ি ও রাঙামাটিতে ১৪৪ ধারা জারি করা হয়েছে। আইএসপিআর জানিয়েছে, দ্রুততার সাথে আইন-শৃঙ্খলা পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনার জন্য জেলা প্রশাসকের সভাপতিত্বে জরুরি সভা অনুষ্ঠিত হয়েছে। সভার সিদ্ধান্ত অনুযায়ী, সেনাবাহিনী, বিজিবি, পুলিশ এবং আনসার বাহিনী যৌথভাবে টহল দেওয়ার পরিকল্পনা করেছে।
সমাধানের জন্য আহ্বান
আইএসপিআর আরও বলেছে, এই উত্তেজনা যাতে দাঙ্গায় রূপ না নেয়, সে জন্য স্থানীয় নেতৃস্থানীয় ব্যক্তিদের সহযোগিতা কামনা করা হয়েছে। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে রাখতে জনগণকে শান্তি ও সম্প্রীতি বজায় রাখার আহ্বান জানানো হয়েছে। পাশাপাশি, প্রকৃত দোষী ব্যক্তিদের সনাক্ত করে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণের কথা বলা হয়েছে।
উপসংহার
পার্বত্য চট্টগ্রামে চলমান উত্তেজনা এবং সহিংসতার ঘটনা উদ্বেগজনক। স্থানীয় জনসাধারণ ও বিভিন্ন সংগঠনের মধ্যে যোগাযোগ ও আলোচনার মাধ্যমে পরিস্থিতি স্থিতিশীল করা সম্ভব। সকল পক্ষের সহানুভূতি ও সহযোগিতা প্রয়োজন, যাতে শান্তি এবং সম্প্রীতি বজায় রাখা যায়।