জিয়াউল আহসান এর ১০০ কোটি টাকার বাগানবাড়ি
- Update Time : ০২:৩৩:২০ অপরাহ্ন, সোমবার, ৯ সেপ্টেম্বর ২০২৪
- / 75
বিশাল অঙ্কের সম্পদের অভিযোগ: সাবেক সেনা কর্মকর্তা জিয়াউল আহসান এবং তার বিতর্কিত বাগানবাড়ি
সম্প্রতি গ্রেফতার হওয়া সাবেক মেজর জেনারেল জিয়াউল আহসানের বিরুদ্ধে বিশাল অঙ্কের সম্পদের মালিকানার অভিযোগ উঠেছে। দেশব্যাপী আলোচিত এই সামরিক কর্মকর্তার বিরুদ্ধে ১০০ কোটি টাকা মূল্যের একটি বাগানবাড়ি নির্মাণের অভিযোগ রয়েছে, যা নারায়ণগঞ্জের রূপগঞ্জ থানার কায়েতপাড়া ইউনিয়নে প্রায় ১০ বিঘা জমির ওপর অবস্থিত।
সামরিক ক্যারিয়ারে বিতর্ক:
জিয়াউল আহসান, যিনি সরকারের সামরিক বিভাগের উচ্চপদস্থ কর্মকর্তা হিসেবে পরিচিত, ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানে ক্ষমতা হারানোর পর বিভিন্ন বিতর্কিত কর্মকাণ্ডের সাথে যুক্ত ছিলেন। তিনি গুম-খুনের নেপথ্যের নায়ক হিসেবে পরিচিত এবং আলোচিত আয়নাঘরেরও মূল কারিগর। শাপলা চত্বরে হেফাজতের ঘটনায় যৌথ অভিযানের নেতৃত্ব দেওয়ার জন্যও তিনি সমালোচিত হয়েছেন।
বাগানবাড়ির নির্মাণ:
সম্প্রতি প্রকাশিত একটি অনুসন্ধানে জানা গেছে, জিয়াউল আহসান নারায়ণগঞ্জের কায়েতপাড়া ইউনিয়নে বিশাল আকৃতির বাগানবাড়ি নির্মাণ করছেন। ২০১৮ থেকে ২০২০ সালের মধ্যে একাধিক দলিলে জমি ক্রয় করেছেন, যার মূল্য প্রায় ১০০ কোটি টাকা। জমিগুলোর মালিকানা রফিকুল ইসলাম নামক একজন বিতর্কিত ব্যবসায়ীর কাছ থেকে পেয়েছেন বলে জানা গেছে।
অর্থ ও ক্ষমতার অপব্যবহার:
এনটিএমসির সদ্য অব্যাহতিপ্রাপ্ত মহাপরিচালক জিয়াউল আহসান এবং তার পরিবার, বিশেষ করে তার নাবালিকা মেয়ে তাসফিয়া আহসান জইতার নামে এই বাগানবাড়ির জমি রেজিস্ট্রি করেছেন। এসব জমির মালিকানা স্থানান্তরের নথি অনুযায়ী, জমিগুলোর মালিকানার বিভিন্ন স্তরে রফিকুল ইসলাম অথবা তার পরিবারের সদস্যদের সংশ্লিষ্টতা পাওয়া গেছে।
বিশেষজ্ঞরা মনে করেন, সরকারের উচ্চ পর্যায়ের দায়িত্বে থাকা অবস্থায় এমন বিশাল মূল্যের উপহার গ্রহণ করা আইন ও বিধির পরিপন্থী। এই বাগানবাড়ির নির্মাণ কাজ চলাকালীন এলাকাবাসী অভিযোগ করেছে যে, জমির মালিকদের জমি বিক্রিতে বাধ্য করা হয়েছে এবং জিয়াউল আহসানকে উপহার হিসেবে দেওয়া হয়েছে।
গ্রেফতার ও বিচার:
৭ আগস্ট গ্রেফতার হওয়া জিয়াউল আহসান বর্তমানে বিচারাধীন। ঢাকা কলেজের সামনে ছাত্র ও হকার নিহতের মামলায় তাকে গ্রেফতার করা হয়। ১৬ আগস্ট সিএমএম কোর্টে হাজির করা হলে আদালত তার আট দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেছেন। তার বিরুদ্ধে তদন্ত চলমান রয়েছে এবং সরকার সংশ্লিষ্ট বিষয়গুলোর ব্যাপারে কঠোর নজর রাখছে।
জিয়াউল আহসানের জন্ম ১৯৭০ সালের ৪ ডিসেম্বর ঝলকাঠি জেলায়। তিনি ১৯৯১ সালের ২১ জুন বাংলাদেশ সেনাবাহিনীতে পদাতিক কর্মকর্তা হিসেবে কমিশন লাভ করেন এবং সেনাবাহিনী ছাড়াও র্যাব, এনএসআই এবং এনটিএমসি-তে দায়িত্ব পালন করেছেন।
জিয়াউল আহসানের বিতর্কিত কর্মকাণ্ড এবং বিশাল অঙ্কের সম্পদের মালিকানার তদন্তের মাধ্যমে দেশের আইনশৃঙ্খলা বাহিনী ও সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের কাছে তার আইনি জবাবদিহিতা নিশ্চিত করার জন্য সকল প্রক্রিয়া চলমান রয়েছে।